আজ ২রা কার্তিক, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ১৮ই অক্টোবর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

কিশোরগঞ্জে যৌতুকের জন্য স্ত্রীকে তালাক ও নির্যাতনের অভিযোগ এনসিপি নেতার বিরুদ্ধে।

(মো: সারোয়ার জাহান)কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়ায় জাতীয় নাগরিক পার্টি(এনসিপি) উপজেলার প্রধান সমন্বয়ক তারাকান্দি গ্রামের আলাউদ্দিনের পুত্র রাজিন সালেহের বিরুদ্ধে যৌতুকের জন্য স্ত্রীকে নির্যাতন ও তালাকের অভিযোগ উঠেছে।

বৃহস্পতিবার (১০জুলাই) সকাল ১১ টায় পাকুন্দিয়া প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে এমন অভিযোগ করে উপজেলার চরটেকী গ্রামের তাজউদ্দিনের মেয়ে ভুক্তভোগী নারী সুমাইয়া আক্তার হাসি।

সংবাদ সম্মেলনে সুমাইয়া আক্তার বলেন, গত ৫ বছর আগে এনসিপি নেতা রাজিন সালেহের সঙ্গে পারিবারিকভাবে আমার বিয়ে হয়। কিছুদিন যেতে না যেতেই আমার স্বামী যৌতুকের জন্য আমার ওপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন শুরু করে।এছাড়াও আমার পরিবারের সাথে অবজ্ঞাসূচক আচরণ করতে থাকেন এমনকি আমাকে মারধর করে প্রায়ই আমার বাবার বাড়ি পাঠিয়ে দিত। আমাদের সংসারে আড়াই বছরের একটি কন্যা সন্তান থাকায় আমি আমার মেয়ের দিকে চেয়ে অত্যাচার নির্যাতন সহ্য করে সংসার করে আসছি। গত দেড়বছর আগে রাজিন সালেহ পার্শ্ববর্তী গফরগাঁও উপজেলার দিঘীরপাড় আলীয়া মাদ্রাসায় কম্পিউটার অপারেটর পদে চাকরি নেন। এতে ১৩লাখ টাকা ঘুষ দিতে হয়েছে। এসময় আমি ৪ ভরি স্বর্ণালংকার বিক্রি করে তাকে টাকা দিয়েছি। এর কয়েকদিন পরই আবার আমার ওপর নতুন করে নির্যাতন শুরু করে। এক পর্যায়ে আমাকে নির্যাতন করে বাড়ি থেকে বের করে দেয়। আমি বাধ্য হয়ে বাবার বাড়ি চলে আসি।

তিনি আরও বলেন, গত বছরের ৫ আগষ্ট সরকার পতনের পর সে এনসিপি নেতা হয়ে আমার ওপর নির্যাতনের মাত্রা বাড়িয়ে দেয় এবং আমাকে তালাক দেয়ার হুমকী দেয়। এর প্রেক্ষিতে আমি গত ৩০ জুন পাকুন্দিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবরে একটি লিখিত অভিযোগ দেই। অভিযোগের পর এনসিপির কেন্দ্রীয় নেতা সানী আহম্মেদ আমাকে মুঠোফোনে অভিযোগ প্রত্যাহার করার জন্য চাপ দেন এবং এ বিষয়ে মিমাংসা করে দিবে বলেও আশ্বাস দেন। এতে আমি উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে অভিযোগ স্থগিত রাখার জন্য বলি। কিন্তু বেশ কিছুদিন পার হয়ে গেলেও সমাধানের কোন উদ্যোগ তিনি গ্রহন করেননি।

এমনকি ভুক্তভোগী নারী তাঁর আড়াই বছরের শিশু কন্যাকে জোড়পূর্বক রাজিন সালেহ নিয়ে গেছেন বলেও অভিযোগ করেছেন।

অভিযুক্ত স্বামী পাকুন্দিয়া উপজেলার জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) প্রধান সমন্বয়কারী রাজিন সালেহ বলেন, রাষ্ট্রীয় বিধি মেনে আমি তাঁকে তালাক দিয়েছি এবং কাবিনের সম্পূর্ণ টাকা পরিশোধ করেছি।আমি আমার সন্তানকে নিরাপত্তার জন্য আপাতত আমার কাছে রেখেছি।আমি কোর্টের মাধ্যমে তার মায়ের কাছে হস্তান্তর করব।একটি মহল আমাকে পারিবারিক ও রাজনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করতে ষড়যন্ত্র করছে।

পাকুন্দিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. বিল্লাল হোসেন বলেন, বিষয়টি খুবই দুঃখজনক ও অনাকাঙ্ক্ষিত।যেহেতু তাদের কন্যা শিশু রয়েছে সেহেতু বিষয়টি দ্রুত সুষ্ঠু সমাধান হওয়া উচিৎ। কন্যা শিশুর ভবিষ্যৎ বিবেচনা করে যেন ন্যায়বিচার প্রাপ্ত হয় এটা আমাদের চাওয়া।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

     More News Of This Category